logo

FX.co ★ মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দর বৃদ্ধি পেয়েছে

মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দর বৃদ্ধি পেয়েছে

আজ জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর কাজুয়ো উয়েদা সুদের হার বৃদ্ধির স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়ার পরই জাপানি ইয়েনের দর হঠাৎ করে বেড়ে যায়। তিনি জানান, ব্যাংক অব জাপানের ডিসেম্বর বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।


মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইয়েনের দর বৃদ্ধি পেয়েছে

বিনিয়োগকারীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান এবং আক্রমণাত্মকভাবে ইয়েন কেনা শুরু করেন, যার ফলে এটির দর মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে বৃদ্ধি পায়। মার্কেটের ট্রেডাররা উয়েদার এই মন্তব্যকে এমন সংকেত হিসেবে নিয়েছে যে, বহু বছর ধরে চলা অতিমাত্রায় নমনীয় আর্থিক নীতিমালার যুগ শেষের পথে রয়েছে। দেশজুড়ে বাড়তে থাকা মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং ইয়েনের আরও দরপতনের আশঙ্কার প্রেক্ষাপটে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যা অভ্যন্তরীণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করছে।

উয়েদা জোর দিয়ে বলেন, ব্যাংক অব জাপান মূল্যস্ফীতি এবং মজুরির হারের প্রবণতা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, এবং যদি তারা নিশ্চিত হন যে মূল্যস্ফীতি টেকসইভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাহলে নীতিমালায় পরিবর্তনের বিষয়টি তারা বিবেচনায় নিতে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, ডিসেম্বরের বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ হবে, যেহেতু তখন পর্যন্ত ব্যাংক অব জাপানের বোর্ড সদস্যদের হাতে বিশ্লেষণের জন্য আরও বেশি প্রতিবেদন থাকবে।

"কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাব্য সুবিধা ও অসুবিধাগুলো পর্যালোচনা করবে এবং পরবর্তীতে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, মূল্যস্ফীতি এবং অর্থবাজারের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে,"—সোমবার নাগোইয়া শহরে স্থানীয় ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের সামনে এই মন্তব্য করেন উয়েদা। তিনি আরও যোগ করেন, "সুদের হারের যেকোনো বৃদ্ধি 'নমনীয় নীতিমালার মাত্রা' সংশোধনের প্রতিফলন হবে, কারণ প্রকৃত সুদের হার এখনও অনেক নিচু পর্যায়ে রয়ে গেছে।"

ব্যাংকের অব জাপানের সুদের হার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক অর্থবাজারে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। জাপান বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ঋণদাতা দেশ, এবং উচ্চ সুদের হার অন্যান্য নিম্ন সুদের হারসম্পন্ন দেশ থেকে মূলধন বহির্গমনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। এটি স্টক এবং বন্ডের মতো জাপানি অ্যাসেটের মূল্যেও প্রভাব ফেলতে পারে। একই সময়ে, সুদের হার বৃদ্ধির মাধ্যমে ইয়েনের মূল্যের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ও দেশের অভ্যন্তরে মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো সম্ভব হতে পারে। তবে এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকেও মন্থর করতে পারে, কারণ উচ্চ সুদের হার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের ঋণ গ্রহণের খরচ বাড়িয়ে তোলে। জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত নীতিমালার প্রেক্ষাপটে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা আর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সমর্থনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ক্ষমতাসীন জোটের কিছু সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির অর্থনৈতিক উপদেষ্টারা মনে করছেন, মার্কেটে বিভ্রান্তি এড়াতে ব্যাংক অব জাপানের পক্ষ থেকে জানুয়ারি মাসে সুদের হার বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা আরও উপযুক্ত হবে, বিশেষ করে যখন দেশটির সরকার সম্প্রতি মহামারি-পরবর্তী সবচেয়ে বড় ব্যয়ের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। জানুয়ারির সিদ্ধান্ত উয়েদার পক্ষে প্রসঙ্গত বার্ষিক মজুরি আলোচনা (যা সাধারণত মার্চে সমাপ্ত হয়) থেকে প্রাথমিক প্রবণতা বিশ্লেষণের জন্য আরও সময় দেবে। তবুও, অব্যাহত উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং দুর্বল ইয়েন আগেভাগেই নীতিমালার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।

USD/JPY-এর বর্তমান টেকনিক্যাল চিত্র অনুযায়ী, ক্রেতাদের প্রথমে এই পেয়ারের মূল্যের 155.70-এর রেজিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করাতে হবে। এতে তারা এই পেয়ারের মূল্যকে 156.10-এর লক্ষ্যমাত্রার দিকে নিয়ে যেতে পারবে, যার উপরে ব্রেকআউট করানো যথেষ্ট কঠিন হবে। সবচেয়ে দূরবর্তী লক্ষ্যমাত্রা হলো 156.70 লেভেল। যদি এই পেয়ারের মূল্য কমে যায়, তাহলে মূল্য 155.40-এ থাকা অবস্থায় বিক্রেতারা নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করবে। তারা যদি এতে সফল হয়, তাহলে এই রেঞ্জ ব্রেক হয়ে গেলে এটি ক্রেতাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে এবং USD/JPY পেয়ারের মূল্য 155.05-এর লেভেলে নেমে যেতে পারে, পরবর্তীতে সম্ভাব্যভাবে 154.70 পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।

* এখানে পোস্ট করা মার্কেট বিশ্লেষণ মানে আপনার সচেতনতা বৃদ্ধি করা, কিন্তু একটি ট্রেড করার নির্দেশনা প্রদান করা নয়
Go to the articles list Go to this author's articles Open trading account